চুল পড়তেই পারে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজায় প্রতিদিন। নতুন চুল গজানোর চেয়ে যদি চুল পড়ে বেশি, তা হলে দেখা দেয় টাক। যদি দিনে ৫০টির বেশি চুল পড়ে, তবেই সচেতন হতে হবে। নিতে হবে যতœ। ইদানীং চুলে রঙ করার প্রবণতা খুব বেড়েছে। রঙের মধ্যে থাকে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ও ড্রাই। এগুলো চুলের ক্ষতি করে। এ কেমিক্যাল চুলের গোড়া নরম করে চুল পড়তে সহায়তা করে। তাই চুল রঙ করা ঠিক নয়। চুলের ট্রিটমেন্ট করার কারণেও চুল পড়তে পারে। কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো সেবনে চুল পড়তে পারে। ওষুধের কারণে চুল পড়ছে কিনা, তা চিকিৎসক ভালো বলতে পারবেন। এ জন্য পরামর্শ নিতে হবে তার। থাইরয়েড, ডায়াবেটিস কারণেও চুল পড়তে পারে। আবার রক্তস্বল্পতার কারণেও চুল পড়তে পারে।
চুল পড়তে বাধা দেয় এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। প্রতিনিয়ত শ্যাম্পু পরিবর্তন করবেন না। এতে চুল পড়তে পারে। যে শ্যম্পু চুলের জন্য উপযোগী, সেটি ব্যবহার করুন। দাদি-নানিরা আগে চুলের সৌন্দর্য রক্ষায় নারকেল তেল ব্যবহার করতেন। এটা চুলের জন্য বেশ উপকারী। নারকেলের তেল ও চা গাছের তেল চুল পড়তে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি গজাতে সাহায্য করে। তাই শ্যাম্পুর সঙ্গে ১-২ চামচ তেল মিশিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজ করার কারণে মাথার চামড়ায় বা স্কাল্পে রক্ত সরবরাহ বাড়বে। ফলে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান বেশি সরবরাহ হবে। এতে চুল পড়া যেমন কমে যাবে, তেমনি বাড়বে চুল গজানোর হার। দুশ্চিন্তা একেবারেই করবেন না। এ কারণেও চুল পড়তে পারে। মানসিক অবসাদে ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে পারেন। দুশ্চিন্তা দূর করতে মেডিটেশন করতে পারেন। হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। শারীরিক পরিশ্রম করুন। সেই সঙ্গে ব্যায়ামও করতে পারেন। রক্ত সরবরাহ বাড়িয়ে চুল পড়া কমাতে পারে। চুল পড়া বন্ধ করতে পুষ্টিকর খাবারের ভূমিকা অনেক বেশি। দেখা গেছে, যারা পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ জাতীয় খাবার, ভিটামিন বি, সি এবং ই খান না, তাদের বেশি চুল পড়ে। লাইসিন একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড। এটি আয়রন ধরে রাখার এমন একটি পদার্থ, যা ফেরিটিন তৈরি করে চার মাসের মধ্যে চুলের বৃদ্ধি বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে মানসিক দুচিন্তা দূর করতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যবান চুলের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন-বি। ঘন কালো চুলের জন্য টমেটো, শিম, ব্রকলি, স্পাইন্যাচ, শতমুলি, মসুর ডাল, ডিম, দুধ, কলিজা, মাংস, মাছ, আম, কমলা, আঙুর, স্ট্রবেরিসহ বিভিন্ন ধরনের টক ফল, মিষ্টিআলু, কুমড়া, সয়াবিন, সূর্যমুখী বীজ, স্যামন মাছ, পনির খেতে পারেন বেশি করে। মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেটের মাধ্যমেও পূরণ করতে পারেন শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা।
সরাসরি তাপ ব্যবহার করা হয়, এমন চুলের স্টাইল করবেন না। নারীরা চুলে খোঁপা বাঁধতে পারেন। এটা চুল গজাতে সাহায্য করে। তবে শক্ত করে বাঁধবেন না। এতে চুলে রক্ত সরবারহ কমে চুল পড়তে পারে। বেণী করেও চুল বাঁধতে পারেন। রাতে শোয়ার সময়ও চুল খোঁপা বা বেণী করে কোনো কিছু দিয়ে ঢেকে নিন। এত সবের পরও যদি চুল পড়া বন্ধ না হয়, তা হলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আছে চিকিৎসা। হেয়ার রিস্টোরেশন বা হেয়ার রিপ্লেসমেন্ট চিকিৎসার মাধ্যমে জয়ী হতে পারেন চুল না হারোনো যুদ্ধে। তবে কোনো চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রতারিত হবেন না। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছেই পাবেন বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা।
Leave a Reply